Skip to main content

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধিতে দ্বিমত কোথায়


চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধিতে দ্বিমত কোথায় 


চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করার যে আন্দোলন চলছে সেটা আসলে কতটা যৌক্তিক । এ ব‍্যাপারটাতে আমার দ্বিমত আছে । 

কেন বয়সসীমা বাড়ানোটা ঠিক হবে না তার কয়েকটা কারণ বলি- 

এক.  বয়সসীমা বাড়ালে বেকারের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে কারণ ততদিনে আরো তিন/চারটা নতুন ব‍্যাচ চাকরির বাজারে প্রবেশ করবে । যা চাকরির  বাজারে সংকট তৈরী করবে । 

দুই.  এটা ফ্রেশ গ্রেজ‍্যুয়েটদের জন‍্য হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়াবে । কারণ ইতঃপূর্বে চার/পাঁচটা ব‍্যাচ চাকরির জন‍্য নিজেদের তৈরী করে নিচ্ছে। সদ‍্য গ্রেজ‍্যুয়েশ শেষ করা একটা ছেলে, চার/পাঁচ বছর ধরে প্রিপারেশন নিতে থাকা একটা ছেলের থেকে পিছিয়ে থাকবে স্বাভাবিক । উপরন্তু প্রতিযোগীর সংখ‍্যাও দ্বিগুন থেকে তিনগুন বেড়ে যাবে ।  এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মাধ‍্যমে যোগ‍্য প্রার্থী নির্বাচনে বৈষম্য তৈরি হবে। 

তিন.  দেশে চাকরি প্রত‍্যাশীর তুলনায় কর্মসংস্থানের পরিমাণ অনেক কম।  সরকারি ক্ষেত্রে তা আরো নগণ্য । এক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের পরিমাণ বৃদ্ধি না করে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোটা তেমন ফলপ্রসূ হবে না । 

আন্দোলনরত একজনের মতে 'গড় আয়ু বেড়েছে তাই চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমাও বাড়ানো উচিত ।' অথচ ব‍্যাপারটাকে এভাবে ভাবার দরকার ছিল যে, একবছর আগে চাকরি শুরু করা মানে একবছর সুবিধা ভোগ করা । নিজের ক‍্যারিয়ারকে একবছর আগে সাজিয়ে নেওয়া চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০/৩২ এর মধ‍্যে সীমাবদ্ধ থাকলে সবাই ৩০/৩২ বয়সের মধ‍্যেই কিছু একটা করার চেষ্টা করবে এবং  করেও ফেলবে । এতে নিজের জন‍্য যেমন ইতিবাচক ফলাফল পাবে তেমনই নতুনদের জন‍্যও সুযোগ তৈরী হবে । দুই/তিন বছর বেশি সময় পাওয়া মানে দুই/তিন বছর বেকার বেশি থাকা । 

এদেশে এ‍কজন শিক্ষার্থীকে গড়ে পঁচিশ থেকে ছাব্বিশ বছর বয়স পর্যন্ত এ‍্যাকাডেমিক পড়াশোনার পেছনে ব‍্যয় করতে হয় । কারো কারো ক্ষেত্রে দুই/তিন বছর বেশি লাগে । কর্তৃপক্ষের উচিত হবে নির্ধারিত সময়ের মধ‍্যে ক্লাস, পরীক্ষা,  রেজাল্ট দিয়ে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা ।  বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সবসময় দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে । 

আসন্ন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের একজন গর্বিত অংশীদার হতে হলে সবাইকে দক্ষ ও যোগ‍্য করে তৈরী করে নিতে হবে । বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে 'ইয়ুথ পাওয়ার' এর আশির্বাদপুষ্ট ।
তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারলে সুশাসন ও টেকসই উন্নয়নের চলমান অগ্রযাত্রা আরো বেগবান হবে । 


লেখা - মোঃ ফজলে রাব্বী 








Popular Posts

অনার্স চতুর্থবর্ষের ভাইভা : আমার অভিজ্ঞতা

অঙ্কন : প্রসূন হালদার

যে আকুতি প্রস্থানের আগে

  বটতলা জামে মসজিদ, ত্রিশাল

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিপথ : উন্নয়ন সম্ভাবনার নানাদিক

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিপথ : উন্নয়ন সম্ভাবনার নানাদিক মোঃ ফজলে রাব্বী

সমস‍্যাটা আসলে কোথায়?

সমস‍্যাটা আসলে কোথায়?  একজন স্টুডেন্ট তার ক‍্যারিয়ার কোথায় গড়তে চায় সেটা কেন কেউ চ‍্যুজ করে দিবে? সে গভমেন্ট জব করবে, উদ‍্যোক্তা হবে, ব‍্যাবসা করবে নাকি অন‍্য কিছু করবে, সেটা তার ব‍্যক্তিগত বিষয় । সে তার সারাউন্ডিংস, অপচ‍্যুনিটি-কস্ট, প‍্যাশন, সামাজিক ব‍‍্যাপার-স‍্যাপার সবকিছু বিবেচনা করে সে সেটা ডিসাইড করবে ।  অথরিটি বা স্টেকহোল্ডার যারা, তাদের কাজ হচ্ছে তার জার্নিতে সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখা, তার লাইফের ডিসিশন নেওয়া না । দুইজন মানুষের মাছ খাওয়ার চাহিদা থাকতেই পারে,  এখন সে মাছ নিজে নদী থেকে ধরে নিয়ে আসবে নাকি বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসবে সেটা কিসের উপর নির্ভর করে আপনি জানেন না ।  আপনারা কেন এসব কথা বলছেন সবাই জানি। দেশে গভমেন্ট জব অপচ‍্যুনিটি পর্যাপ্ত না, সেজন‍্য স্টুডেন্টদের দায়ী করবেন? সবাইকে পড়াশুনা করার দরকার নাই,  গ্র‍্যাজুয়েট হওয়ার দরকার নাই, এগুলো দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা। কারো এলাকায় নদী/পুকুর নাই, নদী/পুকুরে ডুবে মরার রিস্ক নাই । তাই বলে সে সাতার শিখবে না?  বাংলাদেশে বসে ইউরোপের প্রেক্ষাপট কল্পনা করে কথা বললে হবে না। এর'চে বরং সমস‍্যা যেখানে, সে বিষয় নিয়ে কথা বলেন । পর্যাপ্ত জব অ